ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪
আপডেট : ১ নভেম্বর, ২০২১ ১৯:২২

সাইবার স্পেসে সুরক্ষা পেতে করণীয়

তথ্য ও প্রযুক্তি ডেস্ক
সাইবার স্পেসে সুরক্ষা পেতে করণীয়
প্রতীকী ছবি

সাইবার ক্রাইমঃ যে সকল ডিভাইস ইন্টারনেট দ্বারা সংযুক্ত থাকে যেমন কম্পিউটার অথবা মোবাইল এসব যন্ত্র ব্যবহার করে যখন কেউ কোন অপরাধ করে তখন তাকে সাইবার ক্রাইম বা সাইবার অপরাধ বলা হয়। যারা এধরণের অপরাধ করে তাদের সাইবার অপরাধী বলা হয়। ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করে অপরাধের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারন এ ধরণের অপরাধ যেকোন দূরবর্তী অবস্থান থেকে করা যায় এবং এখানে ধরা পড়ার বা শাস্তি পাওয়ার সম্ভাবনা কম। বর্তমানে হ্যাকিং, ফিসিং, স্প্যামিং, ব্লাকমোইলিং এধরণের অপরাধ বেশি সংঘটিত হয়।

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুনঃ বিভিন্ন সাইটে আপনার পাসওয়ার্ডগুলি পুনরাবৃত্তি করবেন না এবং আপনার পাসওয়ার্ডগুলি নিয়মিত পরিবর্তন করুন। পাসওয়ার্ড জটিল করুন। ক্যাপিটাল লেটার, স্মল লেটার, নাম্বার এবং বিভিন্ন চিহ্নের সংমিশ্রনে পাসওয়ার্ড তৈরী করুন। যেমনঃ Asdfg09@&% এরকম যদি আপনার পাসওয়ার্ড হয়, তাহলে কারো পক্ষে সেটা আন্দাজ করা কোনভাবেই সম্ভব হবে না।

অপরিচিত কোন লিংকে ক্লিক করবেন নাঃ আপনি হয়তো একটা ইমেইল পেলেন, ওখানে একটা অফার দেখলেন বা লোভনীয় কিছু দেখলেন কিন্তু আপনি ইমেইল সেন্ডারকে ও চিনেন না, কিংবা যে সার্ভার থেকে মেইলটা আসছে সেটা ও আপনার পরিচিত নাহ, এমন অবস্থায় এই টাইপের ইমেইল ওপেন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। শুধু ইমেইলেই নাহ, আপনি ফেসবুক, টুইটার, কিংবা ইনস্টাগ্রাম ইনবক্সে ও অসংখ্য এমন ম্যালিশিয়াস লিংকস পাবেন। আপনাকে এসব লিংক থেকে খুব সতর্ক থাকতে হবে। এভাবে আপনার অনেক পার্সোনাল তথ্য চলে যেতে পারে হ্যাকারের কাছে।

সোশ্যাল মিডিয়ার নিরাপত্তা সেটিংস শক্তিশালী করুনঃ ফেসবুক সহ নানা ওয়েব সাইটে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন অপশন চালু রয়েছে। এটা খুবই স্ট্রং একটা প্রসেস। এর ফলে কেউ কোন ওয়েবসাইটে লগিন করতে চাইলে দুইটা স্টেপ পার হয়ে যেতে হবে। যেমনঃ হ্যাকার আপনার পাসওয়ার্ড পেয়ে গেছে, এখন সে পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিন করলেই কিন্তু সে আপনার একাউন্টের এক্সেস পেয়ে যাবে। কিন্তু টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু থাকলে তাকে পাসওয়ার্ড দেওয়ার পরে ইমেইল কিংবা ফোনের মাধ্যমে আবার ও একটা কোড দিয়ে ভেরিফাই করে তারপর লগ-ইন করতে হবে। সো বুঝাই যাচ্ছে এই পদ্ধতিটা কতটা ইফেক্টিভ। এই পদ্ধতি গুলো যদি আপনি প্রোপারলি ফলো করেন, তাহলে আশা করা যায় যে আপনি অনাকাঙ্ক্ষিত হ্যাকিং এর শিকার হবেন না।

এন্টি-ভাইরাস সফটওয়ার ইউজ করুনঃ কম্পিউটারের সুরক্ষার জন্য এন্টি-ভাইরাসের কোন বিকল্প নেই। আপনার কম্পিউটারের সর্ব প্রকার সিকিউরিটির জন্য আপনাকে অবশ্যই একটা প্রিমিয়াম এন্টি-ভাইরাস সফটওয়ার ব্যবহার করা উচিত। এতে করে এন্টি-ভাইরাস নিজে থেকেই অনেক সাসপিশিয়াস ওয়েবসাইট এবং প্রোগ্রাম ব্লক করে দিয়ে আপনাকে সুরক্ষিত রাখবে। আর নির্দিষ্ট সময় পর পর প্রোপার আপডেট এবং স্ক্যানের মাধ্যমে আপনি আপনার পিসির হেলথ সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন। কোন প্রকার ভাইরাস থাকলে সেটা আপনার স্ক্যানে ধরা পড়বে এবং রিমুভ ও করা যাবে। এটা আপনার হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশেই কমিয়ে দেয়।

আপনার ডিভাইসে অপারেটিং সিস্টেম আপডেট রাখুনঃ আপানার পিসি কিংবা ফোনে যেই অপারেটিং সিস্টেমটি ব্যবহার করছেন সেটি সবসময় আপডেট রাখুন। ফ্রি অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন এবং পেইড ভার্সন ব্যবহার করুন, এতে আপনার ডিভাইসটি অধিক সুরক্ষিত থাকবে।

সাইবার ক্রাইমে শিকার হলে করণীয়ঃ আপনি যদি কোনও সাইবার ক্রাইমের শিকার হন তাহলে স্থানীয় পুলিশকে অবহিত করুন প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করুন। বাংলাদেশ পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম আপনাকে সহযোগীতা করবে। অপরাধটি সামান্য বলে মনে হলেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। আপনার অভিযোগ কর্তৃপক্ষকে তাদের তদন্তে সহায়তা করতে পারে বা ভবিষ্যতে অপরাধীদেরকে অন্য ব্যক্তির থেকে সুবিধা গ্রহণ থেকে বিরত রাখতে সহায়তা করতে পারে।


 

লেখকঃ জি.এম. রাহাত হুসাইন বাবু
বিএসসি ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়।
ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, সরকারী ভোলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট।

উপরে