ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
আপডেট : ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৬:৫৮

তারেক-জোবাইদাকে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
তারেক-জোবাইদাকে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ


জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৬ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেছেন আদালত।
এদিন তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাদের কোনো মালামাল পাননি বলে আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর বিচারক মামলার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে বিজি প্রেসের মাধ্যমে তাদের আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন।

দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজি প্রেসের মাধ্যমে তারেক-জোবায়দাকে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। চলতি মাসের ৫ জানুয়ারি তারেক ও জোবায়দার সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। এর আগে ১ নভেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। তাদের গ্রেফতার করতে না পারায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আদালত তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসিকে ১৯ জানুয়ারির মধ্যে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়।

ওইদিন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজল বলেছিলেন, দুর্নীতির এ মামলায় তারেক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে গত ১ নভেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। সম্প্রতি আদালতে প্রতিবেদন এসেছে, তারা পলাতক রয়েছেন। এ নিয়ে আদালত ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী তাদের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ঘোষিত আয়ের বাইরে চার কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। এরপর ২০০৮ সালে এ তিনজনের বিরুদ্ধে দাখিল করা হয় অভিযোগপত্র।

এদিকে মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জোবায়দা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। তবে এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে রায় দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই মামলায় আট সপ্তাহের মধ্যে জোবায়দাকে বিচারিক আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেয়া হয়।

উচ্চ আদালতের এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরই লিভ টু আপিল করেন জোবায়দা। এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ লিভ টু আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখেন।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা ও দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ডে দণ্ডিত তারেক রহমান এক যুগের বেশি সময় ধরে পরিবার নিয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে বিভিন্ন সময় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। অপরদিকে বিএনপির নেতাদের অভিযোগ, রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে তাদের নেতা তারেক রহমানকে ‘মিথ্যা’ মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।

উপরে