ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
আপডেট : ২০ অক্টোবর, ২০২১ ১১:৪০

রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করছে সরকার: ফখরুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করছে সরকার: ফখরুল
ফাইল ছবি

পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনাকে পুঁজি করে সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানটির ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।

তিনি বলেন, এই আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এদেশে বিভাজন সৃষ্টি করছে এবং বিভাজন সৃষ্টি করে তারা এটাকে পুঁজি করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে চাচ্ছে। কিছুক্ষণ আগে একজন বলেছেন, আজকে তারা (আওয়ামী লীগ) শান্তি মিছিল বের করেছে।

তিনি বলেন, অশান্তি ঘটালেন আপনারা, আজকে শান্তি মিছিল বের করছেন। এর চেয়ে লজ্জার বিষয় আর কিছু হতে পারে না। এই আওয়ামী লীগ এটাই। এটাই আওয়ামী লীগের খাঁটি চরিত্র। এটাই তারা করে এসেছে জন্মের পর থেকে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন এদেশের মানুষ অনেক বেশি কষ্ট পাবে। আমাদের অর্জনগুলো হারিয়ে যাবে। আমরা আরও বেশি নিচের দিকে নামতে থাকবো। তাই আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সকল সচেতন মানুষ যারা আছি, তারা মিলে এই সরকারকে সরাতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এদের সরাতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মধ্যদিয়ে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, সাদা-কালো, বাম-ডান সকলে এক হয়ে এদের সরাতে হবে। এদের সরিয়ে এখানে জনগণের একটা রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হবে, জনগণের একটা সরকার তৈরি করতে হবে, জনগণের একটা বাসভূমি তৈরি করতে হবে। তাহলেই জিয়াউর রহমানকে সবচেয়ে বেশি সম্মান প্রদর্শন করা হবে।

তিনি বলেন, আজকে দেখুন, এই যে সাম্প্রদায়িক সমস্যা-সংকট সরকার তৈরি হয়েছে। এখানে দাদা (গয়েশ্বর চন্দ্র রায়) আছেন। দাদার বাড়িতে পূজা হয়েছে, সেই বাড়িতে আমরা গিয়েছিলাম। এর আগের বছর যখন গেছি তখন দেখেছি কী উৎসব, কী আনন্দ। সেখানে কাছাকাছি আরও কয়েকটা পূজামণ্ডপে পূজা হচ্ছিল, লোকজন রাস্তায় বোঝাই হয়েছিল।

‘এবার গিয়ে দেখলাম দাদার বাড়িতে ওইভাবে লোক নেই। কারণ মানুষ ভয় পেয়ে গেছে, সেভাবে লোকজন আসছে না। পূজা সেভাবে হচ্ছে না। এবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এসেছি, সেখানেও আমি দেখেছি- অনেক কম মানুষ। বনানীতে পূজামণ্ডপে গেছি, সেখানেও অনেক কম মানুষ। কেন? আমাদের ভাই, আমাদের পাড়া-প্রতিবেশি, আমাদের দেশের স্বাধীন নাগরিক, তারা কেন তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করতে পারবে না? আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিভাবে বিভাজন সৃষ্টি করছে।

আওয়ামী লীগ কখনো গণতন্ত্র ফেরত দেবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা বোঝার কোনো কারণ নেই যে, তারা আমাদের গণতন্ত্র দেবে। গণতন্ত্র তারা নিজের হাতে শেষ করেছে ১৯৭৫ সালে এবং এবার ২০০৮ সাল থেকে শুরু করেছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের আত্মাটা কী, বাংলাদেশের আত্মা হচ্ছে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, গণতান্ত্রিক সমাজ, মুক্ত সমাজ। সেই আত্মাকে তারা ধবংস করছে পরিকল্পিতভাবে। আপনারা দেখুন, তারা কথা বলতে দেয়? লিখতে দেয় না। আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা আজকে এই খবর বড় জোড় দুই সেকেন্ড/তিন সেকেন্ড বা ১/২ মিনিট দেখাতে পারবে, পত্রিকায় একটা কলাম হবে। আমি বলি দোষ তাদের না। তাদের ম্যানজেমেন্ট, মালিক যারা, তারা সবাই কোনো না কোনোভাবে সরকারের সঙ্গে জড়িত আছে। হয় ব্যবসা-বাণিজ্য বা অন্য কোনোভাবে অথবা সরকার তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করছে। যদি কিছু লিখতে যায় সাংবাদিকের চাকরি চলে যায়, পত্রিকা বন্ধ হয়ে যায়, হয়েছেও। অনেক পত্রিকা ও অনলাইন এই সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। এই একটা দম বন্ধ করার একটা পরিবেশ এখন বিরাজ করছে।

আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণে জিয়াউর রহমানের নানা যুগান্তকারী পদক্ষেপ তুলে ধরে নতুন প্রজন্মকে তার জীবনাদর্শ ও দর্শন অনুসরণের আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।

সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, পেশাজীবী নেতা গাজী আব্দুল হক, প্রকৌশলী মিয়া মুহাম্মদ কাইয়ুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ডা. পারভেজ রেজা কাঁকন, অধ্যাপক আবদুল করীম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের রকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানসহ পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

উপরে