ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
আপডেট : ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৭:০৫

একবারও হাসপাতালে যাননি ১১৫ বছর বয়সী এই নারী

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
একবারও হাসপাতালে যাননি ১১৫ বছর বয়সী এই নারী

 

১১৮ বছর বয়সী ফরাসি সন্ন্যাসিনী লুসিল র‌্যাঁদের মৃত্যুর পর ১১৫ বছর বয়সি মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরাই নাকি এখন বিশ্বের প্রবীণতম মানুষ। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, জীবদ্দশায় এক দিনের জন্যও নাকি হাসপাতাল বা চিকিৎসাকেন্দ্রের মুখ দেখেননি শতায়ু মারিয়া। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই তাকে নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

বুধবার গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের কর্মকর্তা রবার্ট ডি ইয়ং জানিয়েছেন, মনে করা হচ্ছে মারিয়া বর্তমানে বিশ্বের প্রবীণতম মানুষ। মারিয়া সম্পর্কে সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখার পরে এবং তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পরই আনুষ্ঠানিক ভাবে তাকে বিশ্বের প্রবীণতম মানুষ বলে ঘোষণা করা হবে।

বর্তমানে উত্তর-পূর্ব স্পেনের ওলোট শহরের পরিবারের সঙ্গে থাকেন মারিয়া। মারিয়ার কনিষ্ঠ কন্যা, ৭৮ বছর বয়সি রোসা মোরেট বলেন, আমার মাকে আজ পর্যন্ত কখনও কোনও অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়নি। মায়ের শরীরে কোনও হাড় কখনও ভাঙেনি। এই বয়সেও উনি সম্পূর্ণরূপে সুস্থ। মায়ের দীর্ঘ আয়ুর জন্য পূর্বপুরুষ সূত্রে পাওয়া জিনকেই কৃতিত্ব দিয়েছেন মোরেট।

মারিয়ার পূর্বপুরুষরা স্পেনের বাসিন্দা হলেও তার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে। ১৯০৭ সালের গোড়ার দিকে তার বাবা-মা মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। ওই বছরেই ৪ মার্চ সান ফ্রান্সিসকোতে জন্ম হয় মারিয়ার। ১১৫ বছরের জীবনে ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু মহামারি, দুই বিশ্বযুদ্ধ এবং স্পেনের গৃহযুদ্ধের সাক্ষী হয়েছেন তিনি।

১৯১৫ সালে অর্থাৎ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মারিয়ার পরিবার স্পেনে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। জাহাজে যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্পেন যাওয়ার পথে মারিয়ার বাবা যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সমুদ্রে ফেলে দেয়া হয়েছিল তার মৃতদেহ। মায়ের সঙ্গে স্পেনে ফিরে আসেন মারিয়া। ১৯৩১ সালে এক জন চিকিৎসককে বিয়ে করেন। মারিয়ার তিন সন্তান, যার মধ্যে এক জন ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন। ১১ জন নাতি-নাতনি এবং ১১ জন পুতি রয়েছে তার।
মারিয়াকে দমাতে পারেনি কোভিডও। মারণ ভাইরাসে প্রবীণ পড়শিদের মৃত্যুমিছিলের মাঝে দাঁড়িয়ে তার গালভরা যুদ্ধ-জয়ের হাসি ইন্টারনেটে তুমুল ভাইরাল হয়েছিল। মারিয়ার মেয়ে মোরেটের দাবি, অতিমারি আবহে করোনা আক্রান্তও হয়েছিলেন মারিয়া। তবে ঘরের মধ্যে নিভৃতবাসে থেকেই নাকি তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।

অনেকেই মারিয়াকে প্রশ্ন করেন, আপনার এই সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবনের আসল রহস্য কী? উত্তরে একগাল হেসে বৃদ্ধা উত্তর দেন, তিনি সবসময় হাসিখুশি থাকেন। মনই সুস্থ শরীরের চাবিকাঠি। মন ভাল থাকলেই শরীর ভাল থাকে।

তিনি আরও বলেছিলেন, আমার সুস্বাস্থ্যই আমার অহঙ্কার। আমি ক্রমেই সুস্থ হয়ে উঠছি। জীবনে কখনও নাকি হাসপাতালের মুখ দেখেননি বৃদ্ধা। অসুখবিসুখ হলেও সেরেও গেছে দ্রুত। এতটাই শক্তপোক্ত তার রোগ প্রতিরোধ শক্তি।

উপরে