ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৮:১১

আবারও সংঘর্ষে জড়াল আর্মেনিয়া-আজারবাইজান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আবারও সংঘর্ষে জড়াল আর্মেনিয়া-আজারবাইজান


নাগোর্নো-কারাবাখের বিতর্কিত অঞ্চলে মঙ্গলবার মধ্য রাত থেকে আবার আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের তীব্র সংঘাত হয়েছে। দুই পক্ষই পাল্টা হামলায় প্রচুর গোলাগুলি চালিয়েছে। নতুন করে শুরু হওয়া ভয়াবহ সীমান্ত সংঘর্ষে আর্মেনিয়ার প্রায় অর্ধশত সৈন্য নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। তবে আজারবাইজানের পক্ষ থেকে সেই সংখ্যাটা তারা জানায়নি। এদিকে দুই পক্ষই একে অপরের ঘাড়ে দায় চাপাচ্ছে। দুই পক্ষের দাবি, অন্যজন প্রথমে হামলা চালিয়েছে, পরে তারা জবাব দিয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন,রাত বারোটা পাঁচ মিনিটে আজারবাইজান প্রবল গোলাবর্ষণ শুরু করে। গোরিস, সটক ওজারমুকের মতো শহর লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায় তারা। লড়াই এখনো চলছে,পরিস্থিতি যথেষ্ট উত্তেজক।
আর্মেনিয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনীর ইউনিটগুলো মর্টারসহ বিভিন্ন ক্যালিবারের অস্ত্র দিয়ে আজারবাইজানের সশস্ত্র বাহিনীর বেশ কয়েকটি অবস্থান, আশ্রয়স্থল ও রিইনফোর্সমেন্ট পয়েন্টে তীব্র গোলাবর্ষণ করেছে। এতে প্রাণহানি ও সামরিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আজারবাইজানের বক্তব্য, আর্মেনিয়ার বাহিনী প্রথমে সোমবার রাতে গোলাগুলি চালাতে শুরু করে। দাসকেসান, কেলবাজার ও লাচিনে তারা ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ করে এবং গোলাগুলি চালায়। আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের সেনা পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে মাত্র।
আর্মেনিয়ার সেনা জানিয়েছে, তারা উপযুক্ত জবাব দিয়েছে। আর আজারবাইজান সেনার দাবি, আর্মেনিয়া মর্টার-সহ নানা ধরনের অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করেছে।

এদিকে রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে, আর্মেনিয়ার সরকার বলেছে, যুদ্ধ বন্ধে তারা রাশিয়ার সাথে একটি সহযোগিতা চুক্তির আহ্বান জানাবে। এছাড়া রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন একটি নিরাপত্তা ব্লক ও যৌথ নিরাপত্তা চুক্তি সংস্থার পাশাপাশি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে আবেদন করবে।

পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ছাড়াও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে ফোন করেছেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান। প্রতিক্রিয়ায় দুই পক্ষকে অবিলম্বে সংঘাত অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন ব্লিঙ্কেন।
এদিকে, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রতিবেশি আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানকে দ্রুত যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানো হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, মস্কোর স্থানীয় সময় সময় সকাল ৯টা থেকে একটি যুদ্ধবিরতি সম্মত হয়েছে উভয় পক্ষ।
এর আগে গত সপ্তাহে আর্মেনিয়া অভিযোগ করেছিল, আজারবাইজান তাদের এক সেনাকে হত্যা করেছে। আজারবাইজানও অভিযোগ করে, গত কয়েক মাস ধরে আর্মেনিয়া তাদের উপর গোলাগুলি চালাচ্ছে।

উল্লেখ্য, নাগর্নো-কারাবাখ এলাকায় দুই দেশ দুইবার যুদ্ধ করেছে। ৩০ বছর ধরে আর্মেনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এই জায়গাটি নিয়ন্ত্রণ করেছে। পরে আজারবাইজান প্রায় পুরো এলাকা দখল নেয়। ২০২০ সালে দুই দেশের মধ্যে যে ছয় সপ্তাহের লড়াই হয়েছিল, তখনই আজারবাইজানের সেনা নাগর্নো-কারাবাখের প্রায় পুরো এলাকা দখল করে। পরে রাশিয়ারমধ্যস্থতায় তাদের চুক্তি হয়েছিল এবং যুদ্ধের অবসান হয়। সেই চুক্তি ভেঙেই আবারও সংঘাতে জড়াল দুই দেশ।

সূত্র: রয়টার্স

উপরে