অভাবে পড়েও পারমাণবিক কর্মসূচি থামায়নি উ. কোরিয়া: জাতিসংঘ
একদিকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, অন্যদিকে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তৈরি হওয়া ভয়াবহ সংকট। এরপরও পরমাণু এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি থামানোর লক্ষণ নেই উত্তর কোরিয়ার। এমনকি আন্তর্জাতিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসেও তারা অব্যাহত রেখেছে এই প্রচেষ্টা। গত শুক্রবার জাতিসংঘের একটি গোপন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ তথ্য প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে নিষেধাজ্ঞা পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত একটি স্বাধীন কমিটির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিয়ংইয়ং এসব কর্মসূচির জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে সরঞ্জাম ও প্রযুক্তির সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক দুর্ভোগ সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়া তার পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিকাশ অব্যাহত রেখেছে।
বিশ্ব থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকা উত্তর কোরিয়া করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত বছর কঠোর লকডাউন দিতে বাধ্য হয়েছিল। এতে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় ইতোমধ্যে জর্জরিত দেশটির অর্থনীতি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত জুনে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন বলেছিলেন, দেশটি খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হয়েছে এবং এই বছরের ফসলের ওপর ‘অনেক কিছু’ নির্ভর করছে।
জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকরা গোপন প্রতিবেদনটিতে বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার দেয়া বিবৃতিগুলো প্রমাণ করছে যে, দেশটিতে মানবিক সংকট আরও গভীর হয়েছে। অবশ্য কোভিড-১৯ অবরোধের অর্থ হচ্ছে, মানবিক পরিস্থিতির ওপর নিষেধাজ্ঞার আপেক্ষিক প্রভাব সম্ভবত হ্রাস পেয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, অবরোধের কারণে বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি গত বছরের বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, ফলে উত্তর কোরিয়ার জনসংখ্যার বেশিরভাগই সম্ভবত দরিদ্র হয়ে পড়েছে।
পরমাণু ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির কারণে ২০০৬ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মুখে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। এসব কর্মসূচিতে অর্থায়ন বন্ধ করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদও ধারাবাহিকভাবে বিধিনিষেধ বাড়িয়েছে। যেমন- উত্তর কোরিয়া থেকে কয়লাসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি এবং তাদের কাছে তেল রফতানিতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
জাতিসংঘে উত্তর কোরিয়ার মিশন এই প্রতিবেদনের বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।