গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নেত্রকোণায় নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এরই মধ্যে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত জেলার কংস, ধনু ও উব্ধাখালী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত জেলার কংস নদীর পানি জারিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার, ধনু নদীর পানি খালিয়াজুরী পয়েন্টে ৫৯ সেন্টিমিটার ও উব্ধাখালী নদীর পানি কলমাকান্দা ডাকবাংলা পয়েন্টে ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে জেলার সোমেশ্বরী নদীর পানি দুর্গাপুর পয়েন্টে বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, যদি নতুন করে বৃষ্টিপাত না হয় এবং উজানের ঢল বন্ধ থাকে তাহলে পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তবে যেভাবে পানি কমছে, তাতে বেশ সময় লাগবে।
বৃষ্টিপাত দুদিন ধরে তেমন না থাকায় নদ-নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে কমছে না বন্যাদুর্গত লোকজনের দুর্ভোগ। তারা বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকটে রয়েছেন। গৃহপালিত পশুপাখি, গরু-ছাগল-ভেড়া নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন বন্যাকবলিতরা।
অন্যদিকে জেলার ১০ উপজেলার ৬৩টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লক্ষাধিক মানুষ। পানিবন্দি এসব মানুষের মধ্যে অন্তত দেড় লক্ষাধিক নারী, পুরুষ, শিশু ও প্রতিবন্ধী তাদের গবাদি পশুসহ ঠাঁই নিয়েছেন ৩২৯ আশ্রয়কেন্দ্রে।
জেলার হাওর উপজেলা খালিয়াজুরীর ৬ ইউনিয়নের সব গ্রামের মানুষ পানিবন্দি থাকায় তাদের উদ্ধার করতে স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি রোববার থেকে কাজ করছে সেনাবাহিনী ১৯ পদাতিক ডিভিশনের শতাধিক সদস্যের একটি দল।
সোমবার দুপুরে নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ ও সেনাবাহিনীর ১৯ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি নকীব আহমেদ খালিয়াজুরী উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ও এলাকা ঘুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। এ সময় নেত্রকোণার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী ও খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এএইচএম আরিফুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।