ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
আপডেট : ৩ এপ্রিল, ২০১৮ ১৩:৫৭

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে হাসান ইমাম যা বললেন

প্রতিদিন ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে হাসান ইমাম যা বললেন

ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি পুরুষ সৈয়দ হাসান ইমাম। চলচ্চিত্রের সঙ্গে কেটেছে তার পাঁচ দশকেরও বেশি সময়। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও তার পরিচিতি বাংলা সিনেমার অভিনেতা হিসেবে। অভিনয়ের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতায় তিনি তিনি ঢাকাই সিনেমার অভিভাবকের মতো।

মানুষ হিসেবে দারুণ বিনয়ী তিনি। সদালাপী, হাসেন প্রাণ খুলে। কথা বলেন ভাষার মিষ্টতায়। তার ব্যবহার মুগ্ধ করে রাখে প্রথম সাক্ষাতেই। তার উপর চোখ বন্ধ করে ভরসা করেন ইন্ডাস্ট্রির প্রতিটি মানুষ। নিভৃতে জীবন যাপন করলেও ইন্ডাস্ট্রির সকল ক্রান্তিলগ্নেই তাকে পাওয়া গেছে মজবুত ভূমিকায়।

আজ এই মানুষটিকে ঘিরেই বিএফডিসি তথা তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে চলচ্চিত্রের কর্মীরা। জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি হিসেবে প্রথমে সৈয়দ হাসান ইমামকে ঠিক করে আবার তাকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়েছিলো বলে তাবি তুলে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে বয়কট করার ঘোষণা দেয় বিএফডিসির তাদের সংগঠন চলচ্চিত্র স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটি। কিন্তু মন্ত্রী এই ঘটনাটিকে মিথ্যে বলে দাবি করেন। তিনি এও ঘোষণা করেন সৈয়দ হাসান ইমামকে সভাপতি করেই পালিত জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস।

কিন্তু সেই ঘোষণার সঙ্গে আপস করেনি চলচ্চিত্র পরিবার। তারা হাসান ইমামকে ছোট করার চেষ্টাকে সামগ্রিক চলচ্চিত্রকে ছোট করার প্রক্রিয়া বলেই দাবি করেন এবং নিজেরা আলাদাভাবে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস পালন করছেন। সেই দিবসের আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন হয় আজ মঙ্গলবার , ৩ এপ্রিল।

এই অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ হাসান ইমাম। নিজের বক্তব্য দিতে গিয়ে দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। সেইসঙ্গে চলচ্চিত্রের উন্নয়নে বিএফডিসির বর্তমান নেতৃত্ব সম্পর্কে অনুসন্ধান চালিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘আজ যেভাবে এই উৎসবে হাজির হয়েছি আমরা এমনটি হবার কথা ছিলো না। গেল কয়েক বছরে বারবার বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছি আমরা। প্রতিষ্ঠানটি চলচ্চিত্রের জন্য বান্ধব হতে পারছে না। অথচ চলচ্চিত্র ও তার মানুষদের স্বার্থে নিবেদিত থাকার জন্যই এফডিসি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই এফডিসির আজ করুণ দশা। এই প্রতিষ্ঠানটির খোঁজ খবর হয়তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাখেন না। তিনি যদি এদিকে দৃষ্টি দিতেন আমাদের উপকার হতো।’

এই অভিনেতা আরও বলেন, ‘জীবনের এক তৃতীয়াংশ সময় এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাটিয়েছি। বারবার এক হয়েছি যে কোনো ক্রান্তিলগ্নে। এখনো পারি। এই ইন্ডাস্ট্রির জন্য প্রয়োজনে জীবন দিতেও রাজি আছি। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমি বলবো আমাদের পাশে দাঁড়ান। আমরা ভালো কিছু করতে চাই। নিজেদের নামগুলোকে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত করতে চাই। ডিজিটাল বাংলাদেশে সবাই যখন এগিয়ে যাচ্ছে চলচ্চিত্র শিল্পটা তখন পিছিয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্রীয় পরিচর্যার অভাবে। এখানে আপনি ৬০ কোটি টাকা বাজেট দিয়েছিলেন। অথচ এফডিসি থেকে সেই টাকা ফেরত গিয়েছিলো কোনো উন্নয়নের প্রয়োজন নেই বলে। এমন অদ্ভূত ব্যর্থ নেতৃত্ব দিয়ে এত বড় উন্ডাস্ট্রি চলতে পারে না। এখানে অনিয়ম আর সরকারি ক্ষমতার অপপ্রয়োগের এখনো সব ফুরিয়ে যায়নি। আপনি নজর দিলে আবার ঘুরে দাঁড়াবে ঢাকাই সিনেমা। ফিরে আসবে সিনেমার রমরমা অবস্থার সেই বাজার। যে প্রজেকশন মেশিন দেয়া হবে বলে সরকার ঘোষণা দিয়েছিলো সেগুলো আমরা আজও পাইনি। কেবল আশ্বাসেই দিন কেটে যাচ্ছে। সেগুলো যেন সঠিকভাবে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের জন্য নিবেদিতদের হাতে পৌঁছায় সেই ব্যবস্থা করে দিন। একটা যোগ্য নেতৃত্ব দিন আমাদের। আমরা আগেও পেরেছি আবারও পারবো।’

প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করে তিনি বলেন, ‘আপনার জন্য আমরা দোয়া করি আল্লাহ আপনাকে দীর্ঘায়ু দান করুক। সুস্থ রাখুক। আপনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় থাকুক। অন্য সবকিছুর মতো চলচ্চিত্রের প্রতিও আপনার ব্যক্তিগত সুদৃষ্টি থাকুক।’

এসময় উদ্ধোধনের মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির চেয়ারম্যান অভিনেতা ফারুক, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, মহাসচিব বদিউল আলম খোকন, যুগ্ম মহাসচিব শাহীন সুমন, শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানসহ একঝাঁক তারকা। ছিলেন অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন, সাইমন সাদিক, পপি, মতিন রহমান, সোহানুর রহমান সোহান প্রমুখ। উদ্ধোধন অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন নির্মাতা মোহাম্মাদ হোসেন জেমি।

উদ্ধোধন অনুষ্ঠান শেষে চলচ্চিত্রকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিত্রে যোগ দেন। এরপর ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে।

 

ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি পুরুষ সৈয়দ হাসান ইমাম। চলচ্চিত্রের সঙ্গে কেটেছে তার পাঁচ দশকেরও বেশি সময়। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও তার পরিচিতি বাংলা সিনেমার অভিনেতা হিসেবে। অভিনয়ের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতায় তিনি তিনি ঢাকাই সিনেমার অভিভাবকের মতো।

মানুষ হিসেবে দারুণ বিনয়ী তিনি। সদালাপী, হাসেন প্রাণ খুলে। কথা বলেন ভাষার মিষ্টতায়। তার ব্যবহার মুগ্ধ করে রাখে প্রথম সাক্ষাতেই। তার উপর চোখ বন্ধ করে ভরসা করেন ইন্ডাস্ট্রির প্রতিটি মানুষ। নিভৃতে জীবন যাপন করলেও ইন্ডাস্ট্রির সকল ক্রান্তিলগ্নেই তাকে পাওয়া গেছে মজবুত ভূমিকায়।

আজ এই মানুষটিকে ঘিরেই বিএফডিসি তথা তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে চলচ্চিত্রের কর্মীরা। জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি হিসেবে প্রথমে সৈয়দ হাসান ইমামকে ঠিক করে আবার তাকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়েছিলো বলে তাবি তুলে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে বয়কট করার ঘোষণা দেয় বিএফডিসির তাদের সংগঠন চলচ্চিত্র স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটি। কিন্তু মন্ত্রী এই ঘটনাটিকে মিথ্যে বলে দাবি করেন। তিনি এও ঘোষণা করেন সৈয়দ হাসান ইমামকে সভাপতি করেই পালিত জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস।

কিন্তু সেই ঘোষণার সঙ্গে আপস করেনি চলচ্চিত্র পরিবার। তারা হাসান ইমামকে ছোট করার চেষ্টাকে সামগ্রিক চলচ্চিত্রকে ছোট করার প্রক্রিয়া বলেই দাবি করেন এবং নিজেরা আলাদাভাবে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস পালন করছেন। সেই দিবসের আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন হয় আজ মঙ্গলবার , ৩ এপ্রিল।

এই অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ হাসান ইমাম। নিজের বক্তব্য দিতে গিয়ে দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। সেইসঙ্গে চলচ্চিত্রের উন্নয়নে বিএফডিসির বর্তমান নেতৃত্ব সম্পর্কে অনুসন্ধান চালিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘আজ যেভাবে এই উৎসবে হাজির হয়েছি আমরা এমনটি হবার কথা ছিলো না। গেল কয়েক বছরে বারবার বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছি আমরা। প্রতিষ্ঠানটি চলচ্চিত্রের জন্য বান্ধব হতে পারছে না। অথচ চলচ্চিত্র ও তার মানুষদের স্বার্থে নিবেদিত থাকার জন্যই এফডিসি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই এফডিসির আজ করুণ দশা। এই প্রতিষ্ঠানটির খোঁজ খবর হয়তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাখেন না। তিনি যদি এদিকে দৃষ্টি দিতেন আমাদের উপকার হতো।’

এই অভিনেতা আরও বলেন, ‘জীবনের এক তৃতীয়াংশ সময় এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাটিয়েছি। বারবার এক হয়েছি যে কোনো ক্রান্তিলগ্নে। এখনো পারি। এই ইন্ডাস্ট্রির জন্য প্রয়োজনে জীবন দিতেও রাজি আছি। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমি বলবো আমাদের পাশে দাঁড়ান। আমরা ভালো কিছু করতে চাই। নিজেদের নামগুলোকে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত করতে চাই। ডিজিটাল বাংলাদেশে সবাই যখন এগিয়ে যাচ্ছে চলচ্চিত্র শিল্পটা তখন পিছিয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্রীয় পরিচর্যার অভাবে। এখানে আপনি ৬০ কোটি টাকা বাজেট দিয়েছিলেন। অথচ এফডিসি থেকে সেই টাকা ফেরত গিয়েছিলো কোনো উন্নয়নের প্রয়োজন নেই বলে। এমন অদ্ভূত ব্যর্থ নেতৃত্ব দিয়ে এত বড় উন্ডাস্ট্রি চলতে পারে না। এখানে অনিয়ম আর সরকারি ক্ষমতার অপপ্রয়োগের এখনো সব ফুরিয়ে যায়নি। আপনি নজর দিলে আবার ঘুরে দাঁড়াবে ঢাকাই সিনেমা। ফিরে আসবে সিনেমার রমরমা অবস্থার সেই বাজার। যে প্রজেকশন মেশিন দেয়া হবে বলে সরকার ঘোষণা দিয়েছিলো সেগুলো আমরা আজও পাইনি। কেবল আশ্বাসেই দিন কেটে যাচ্ছে। সেগুলো যেন সঠিকভাবে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের জন্য নিবেদিতদের হাতে পৌঁছায় সেই ব্যবস্থা করে দিন। একটা যোগ্য নেতৃত্ব দিন আমাদের। আমরা আগেও পেরেছি আবারও পারবো।’

প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করে তিনি বলেন, ‘আপনার জন্য আমরা দোয়া করি আল্লাহ আপনাকে দীর্ঘায়ু দান করুক। সুস্থ রাখুক। আপনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় থাকুক। অন্য সবকিছুর মতো চলচ্চিত্রের প্রতিও আপনার ব্যক্তিগত সুদৃষ্টি থাকুক।’

এসময় উদ্ধোধনের মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির চেয়ারম্যান অভিনেতা ফারুক, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, মহাসচিব বদিউল আলম খোকন, যুগ্ম মহাসচিব শাহীন সুমন, শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানসহ একঝাঁক তারকা। ছিলেন অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন, সাইমন সাদিক, পপি, মতিন রহমান, সোহানুর রহমান সোহান প্রমুখ। উদ্ধোধন অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন নির্মাতা মোহাম্মাদ হোসেন জেমি।

উদ্ধোধন অনুষ্ঠান শেষে চলচ্চিত্রকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিত্রে যোগ দেন। এরপর ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে।

উপরে