বাংলাদেশের যে কাউকেই নিষেধাজ্ঞা দেবে যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করলে প্রয়োজন অনুসারে যেকোনও বাংলাদেশির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন মিলার। এছাড়া স্টেট ডিপার্টমেন্টের এই ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রসঙ্গটিও উঠে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে ওই ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক ম্যাথিউ মিলারের কাছে বাংলাদেশে গণমাধ্যমকর্মী বা সাংবাদিকদের ওপর ভিসা নীতি কার্যকরের বিষয়ে জানতে চান। তিনি প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র কি বাংলাদেশে নতুন করে আরও ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের কথা ভাবছে, বিশেষ করে সরকারপন্থি মিডিয়াসহ যারা সরকারকে ‘দৈত্য’ হতে সাহায্য করেছে, তাদের বিরুদ্ধে? বিশেষ করে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞার পরিধি আরও বিস্তৃত করছে। অর্থাৎ মিডিয়াসহ অপপ্রচারে জড়িতরাও এর আওতায় আসবে।
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি এখন নির্দিষ্ট কোনও পদক্ষেপ ঘোষণা করতে যাচ্ছি না। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের ঘোষণা অনুসারে বাংলাদেশে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ করার কাজে দায়ী কিংবা জড়িত থাকার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সরকার এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর ভীসা নীতি কার্যকর করার পদক্ষেপ আমরা শুরু করেছি।
তিনি আরও বলেন, গত ২৪ মে ভিসা নীতি ঘোষণার সময় আমরা এটা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি। আমরা ভিসা নীতির কথা বলেছি তবে কারও নাম উল্লেখ করিনি। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দুর্বল ও বাধাগ্রস্থ করার কাজে দায়ী কিংবা জড়িত যেকোনও বাংলাদেশির ক্ষেত্রে এই ভিসা নীতি কার্যকর হবে। অন্য যেকোনও ব্যক্তির ক্ষেত্রে যদি আমরা মনে করি তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা প্রয়োজন, সেক্ষেত্রে আমরা এই নীতি প্রয়োগ করব।
নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বলেন, বাংলাদেশি এক টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। শুধু তার নিরাপত্তা উদ্বেগই নয়, দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। তার এই উদ্বেগ হওয়া স্বাভাবিক। কারণ আমরা বর্তমান সরকারের অধীনে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ওপর কয়েকটি হামলা দেখেছি। এখন প্রশ্ন হলো পিটার হাসের এই উদ্বেগ কতটুকু গুরুত্ব দিচ্ছেন?
জবাবে মিলার বলেন, অবশ্যই কূটনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি না। কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে, দূতাবাস ও সব কূটনৈতিক কর্মীদের রক্ষার দায়িত্ব আয়োজক দেশের। তাদের ওপর আক্রমণ প্রতিরোধে সমস্ত কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে আয়োজক দেশকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে থাকা সম্পর্ককে মূল্যায়ন করে। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ সরকার আমাদের সব কর্মীদের নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেবে।