ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
আপডেট : ৩০ নভেম্বর, ২০২২ ১৭:০০

সব বয়সী মানুষকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিতে হবে: শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
সব বয়সী মানুষকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিতে হবে: শিক্ষামন্ত্রী


শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, অভিজ্ঞতার শিক্ষা, বাস্তবতার শিক্ষা বা কারিগরি শিক্ষা যেটাই গ্রহণ করি সেটা যেন কাজে লাগাতে পারি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সব বয়সের মানুষকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে।
বুধবার সকালে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এসবইউবি) ষষ্ঠ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস পূর্বাচলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপাচার্য ড. মো. আনোয়ারুল কবির।
সমাবর্তনে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ডাক্তার এ এম শামীম।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পবিবর্তন আনা হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার জন্য কৌশলগত পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ এক্রেডিশেন কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে। ন্যাশনাল ব্লেন্ডেড এডুকেশন মাস্টার প্লান চূড়ান্তকরণের পর্যায়ে রয়েছে। অবকাঠামোর পাশাপাশি শিক্ষায় প্রযুক্তির মেলবন্ধন করা হচ্ছে।

দীপু মনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শুরুর সময় অনেকের মনে অনেক অনিশ্চয়তা ছিলো। কিন্তু অল্প সময়ের ব্যবধানে শিক্ষার মানের দিক থেকে অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অভিকর্ষতা অর্জন করেছে। স্টেট ইউনিভার্সিটি তেমনি একটি বিশ্ববিদ্যালয় যা মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে বদ্ধপরিকর। এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণ, বাজার চাহিদার সঙ্গে শিক্ষার যোগসূত্রতা, সচেতনতা ও মূল্যবোধসহ নানা বিষয়ে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে।
নতুন গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এই ধরনের সমাবর্তনে এলে আমার ভালো লাগে। কারণ তারুণ্যের উচ্ছ্বাসটা টের পাই। তরুণরাই ভবিষ্যৎ। তারাই নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে দেবে। তিনি বলেন, স্বপ্ন দেখতে হবে।
আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কথায় বলতে হয় আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের সমাজে আমরা একজন কৃষক বা শ্রমিককে বুদ্ধিজীবী বলি না, বলার কথা ভাবতেই পারি না, কারণ তাদের কায়িক পরিশ্রম সমাজ-নির্দিষ্ট বুদ্ধিজীবীতার সংজ্ঞায় পড়ে না। কিন্তু তারা যদি তাদের বুদ্ধি খাটিয়ে ক্রমাগত খাদ্য এবং বস্তুসামগ্রী উৎপাদন করে না যেতেন, এই দেশটির বেঁচে থাকাই অসম্ভব হত।
তিনি বলেন, মানুষদের কাছ থেকে আত্মশক্তির পাঠটা গ্রহণ করুন। নিঃশব্দে, লক্ষ্য স্থির করে, নিজের সঙ্গে কোনো বিবাদে না জড়িয়ে, শুধু এগিয়ে যান। আত্মশক্তিতে বলিয়ান হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ডা. এ এম শামীম তার বক্তব্যে বলেন, যোগাযোগে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে হবে। বড় মানুষ হবার স্বপ্ন দেখতে হবে। স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। সৎ থাকতে হবে। বাবা-মাকে সম্মান করতে হবে। পৃথিবীর যেখানেই কাজ করো দেশকে ভালোবাসতে হবে। মানুষকে ভালবাসতে হবে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আনোয়ারুল কবির বলেন, আমরা একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ আর চতুর্থ শিল্পবিপ্লবকে সামনে রেখে যেমন শিক্ষা ব্যবস্থা সাজিয়েছি তেমনি ভুলে যাইনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয় চেতনার ইতিহাস ঐতিহ্যের কথা। আমাদের শিক্ষার্থীরা গুগলসহ সব জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এটি আমাদের জন্য গর্বের।

সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি অনুষদের মোট এক হাজার ৮২৫ জন ছাত্র-ছাত্রীকে সনদ প্রদান করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শিতা ও ফলাফল অর্জনকারী মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সম্মাননা পদক প্রদাণ করা হয়।

এর মধ্যে চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেলী আক্তার সেতু, জার্নালিজম, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জাহাঙ্গির আলম এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আলিফ খান। এছাড়া ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন সাত জন এবং ডিনস্ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ৫৫ জন।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ডা. নওজিয়া ইয়াসমীন, রেজিস্ট্রার ড. সাজিদ বিন দোজা, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, তিন অনুষদের ডিন, শিক্ষক, কর্মকর্তা, ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকবৃন্দ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উপরে