ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
আপডেট : ২৬ এপ্রিল, ২০১৮ ১০:৩৪

অমানবিক, মানবিক পুলিশ!

অনলাইন ডেস্ক
অমানবিক, মানবিক পুলিশ!

রাজধানীতে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের সমালোচনা হচ্ছে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের প্রাথমিক সেবা দিয়ে মানবিক পুলিশের খাতায় নাম লেখালেন পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শবনম আক্তার পপি।

রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে আজিমপুর-গাজীপুর রুটে চলাচলকারী ভিআইপি পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা কয়েকটি গাড়িকে প্রচণ্ডবেগে ধাক্কা দেয়, এতে অন্তত ৮-১০টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন।

 

ঘটনাস্থলে দায়িত্বে থাকা ডিএমপির তেজগাঁও পুলিশের নারী কর্মকর্তা পপি এগিয়ে আসেন। নিজেই ড্রাইভ করে বাসটিকে সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেন। আহতদের নিজ হাতে প্রাথমিক সেবা দেন।

পুলিশ কর্মকর্তা পপির এই কর্মকাণ্ড সেখানে উপস্থিত থাকা কয়েকজন মোবাইলফোনের মাধ্যমে ধারণ করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিগুলো ছড়িয়ে পড়ার পর ওই পুলিশ কর্মকর্তার এই কাজকে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ মানুষরা।

কাজী ফয়সাল নামে এক সাংবাদিক ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে লিখেছেন, "জনগনের সেবক পুলিশ"
"প্রকৃত পুলিশিং" We Love This Types of Policing.

ধন্যবাদ আপনাকে এসআই শবনম আক্তার পপি। এমন আরো অনেক সিনিয়র ও জুনিয়র পুলিশ সদস্য রয়েছেন। যাদের ওপর নাগরিকদের আস্থা রয়েছে। কৃতজ্ঞতা তাদের প্রতি। তবে গুটিকয়েকের জন্য গোটা পুলিশ বাহিনীর ওপর দোষারোপ হয়ে থাকে, যা কলঙ্কজনক ও বেদনাদায়ক! যাদের প্রকৃত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, নৈতিকতা ও উদ্দ্যেশ্য নিয়ে প্রশ্ন রয়েছেন।

আসাদ রহমান নামে আরেক সাংবাদিক গত দু'দিন আগে মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার আনোয়ার হোসেন কর্তৃক সাংবাদিক নির্যাতনের ছবি ও লিখেছেন, 'প্রথম ছবিটি (নারী পুলিশ) দ্বিতীয় ছবির পুলিশ ভাইকে উৎসর্গ।

অনেকেই বলছেন, পুলিশের 'খারাপ কাজ' গুলোই সামনে আসে, পুলিশের দোষারোপ করা হয় কিন্তু ভালো কাজকে কেউ সম্মান জানায় না।

শরিয়তপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ফেসবুকে লিখেছেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও থানায় কর্মরত এসআই শবনম আক্তার পপি তুমি আমাদের গর্বিত করেছ। একই থানার সাবেক সহকর্মী হিসেবে আমি অত্যন্ত সম্মানবোধ করছি। ধন্যবাদ শবনম আক্তার পপি।

গুলশান বিভাগের ডিসি মোস্তাক আহমেদও গর্ব প্রকাশ করে লিখেছেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত একজন পথচারীর পা‌য়ের শুশ্রুষা কর‌ছেন একজন পু‌লিশ সদস্য। এ‌ই ছ‌বি শুধু পু‌লি‌শের সেবার কথা ব‌লে না, প‌রিবর্ত‌নের কথাও ব‌লে। শ্রদ্ধা।

এসআই পপির সেই মানবিক কর্মের ছবি জুড়ে দিয়ে কবির চৌধুরী তন্ময় লিখেছেন, এটি একটি পুলিশ অফিসার কর্তৃক সাধারণ মানুষের সেবা প্রদানের ছবি। এক নারী পুলিশ অফিসার তার নিজহাত দিয়ে পায়ে ব্যান্ডেজ পড়িয়ে দিচ্ছে সড়ক দূঘটনায় আহত মানুষকে।

এটি রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারালে সড়ক দুর্ঘটনা কাহিনী। আর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান পুলিশ অফিসার পপি।

এই দৃশ্য ফেসবুকে তুলে ধরার কারণ, আমি বরাবরই স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করি। আমি বড্ড আশাবাদী। সকল অন্ধকার দূর করে একদিন তারাই আলোকিত করবে সমাজ-সভ্যতাকে। ঘটনার পজেটিভ দিকগুলো সবার সাথে শেয়ার করতে আমার ভালো লাগে। তাই ফেসবুক বন্ধুদের সাথে।

ইকবাল হাসান ফরিদ বিপরীত দুই কর্মের ছবি জুড়ে দিয়ে লিখেছেন, ভালো পুলিশ মন্দ পুলিশ।

মানবিক পুলিশের প্রশংসা ঝড়ে পড়েছে সাংবাদিক জামশেদ নাজিমের স্ট্যাটাসে।

তিনি লিখেছেন, পুলিশ, শব্দটার অনেক সংজ্ঞা। কখনো নির্যাতনকারী, কখনো ঘুষখোর, কখনো স্বার্থপর। একটু ভুল করলে কিংবা কেউ খারাপ করলে আমরা পুলিশের ১৪ গোষ্ঠী উদ্ধার করি। তবে এই ছবিগুলো আমি কিংবা আমাদের মতো পুলিশ বিরোধী মানুষরা কী বলবেন? দুর্ঘটনা কবলিতদের সেবা দেয়া মানুষটার পুলিশি আচরণ কই?

তাকে দেখে তো আমার মনে হয়- কোনো বোন তার আহত ভাইকে সেবা দিচ্ছে কিংবা কোনো মা তার সন্তানের ক্ষত পায়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। তুমি নারী নও একজন মা পুলিশ। স্যালুট তোমায়, তোমার মানসিকতাকে!!

সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে এখন পপি বন্দনা। এমন মানবিক পুলিশকেই দেখতে চান জনগণ।

উল্লেখ্য, গত সোমবার নয়াপল্টন এলাকায় বিএনপির মিছিলের সংবাদ সংগ্রহের সময় বাংলা টিভির রিপোর্টার আরমান ও ক্যামেরাপারসন মানিক নির্যাতনের শিকার হন। এতে নেতৃত্ব দেন পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার আনোয়ার হোসেন ও তার ফোর্স

উপরে