ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
আপডেট : ৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৭:৫০

খালেদার সঙ্গে স্বজনদের দেখা করতে না দেয়ার অভিযোগ

প্রতিদিন ডেস্ক
খালেদার সঙ্গে স্বজনদের দেখা করতে না দেয়ার অভিযোগ

২৫ দিন ধরে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার স্বজনদের দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রোববার (৮ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।

রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা চরম আকার ধারণ করেছে। এই মুহূর্তে কারামুক্ত হয়ে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণ না করলে জীবনহানির ঝুঁকি রয়েছে। সুচিকিৎসার অভাবে তার অবস্থা এখন আশঙ্কাজনক। শেখ হাসিনা ও তার পারিষদবর্গ বেগম খালেদা জিয়ার অবনতিশীল অবস্থা নিয়ে রীতিমতো রসিকতা করছেন। এই রসিকতা এক নিষ্ঠুর মানসিক বিকারগ্রস্ততার লক্ষণ। বেগম জিয়ার জামিন যেন না হয় সে জন্য সরকারপ্রধান নিজেই প্রকাশ্য সমাবেশে রায় ঘোষণা করছেন। এতে করে এই মিডনাইট সরকারের ভয়ংকর অশুভ ষড়যন্ত্রের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। আমরা বর্তমানে দেশনেত্রীর শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে চরম আশঙ্কায় দিনাতিপাত করছি।

তিনি বলেন, তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে দেশনেত্রীর ভাই-বোন-স্বজনরা সাক্ষাৎ করার আবেদন করলেও কারা কর্তৃপক্ষ শেখ হাসিনার নির্দেশে অনুমতি দিচ্ছেন না। গত ২৫ দিন হলো দেশনেত্রীর সঙ্গে তার স্বজনদের সাক্ষাৎ বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। গত ১৩ নভেম্বরের পর আর সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। ফলে আমরা চরম শঙ্কা ও উৎকণ্ঠায় আছি। একজন বন্দির সঙ্গে স্বজনদের দেখা করতে না দেয়া এক চরম মানসিক নিপীড়ন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী সাতদিন পরপর বন্দিদের সঙ্গে সাক্ষাতের নিয়ম। অথচ বেগম জিয়ার ক্ষেত্রে এই বিধান করা হলো ১৫ দিন পরপর। এখন সেই ১৫ দিনের বিধানকেও সরকারের নির্দেশে কারা কর্তৃপক্ষ অগ্রাহ্য করছেন কারাবিধি লঙ্ঘন করে। এই কদর্য মানসিক নির্যাতনের উদ্দেশ্যই হচ্ছে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে দুর্বল ও বিপন্ন করা। অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার আত্মীয়-স্বজনদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

রিজভী আরও বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষ জানে, সরকারের কারসাজিতেই দেশনেত্রীর জামিন নিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করতে চেয়েছিলাম, নিম্ন আদালতে বিচারের নামে বেগম জিয়া অবিচারের শিকার হলেও উচ্চ আদালতে তিনি সুবিচার পাবেন। আমরা বিশ্বাস করতে চেয়েছিলাম, উচ্চ আদালতের বিচারকরা দেশের সংবিধান, আইন সর্বোপরি নিজেদের বিবেকের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবেন। জনগণ যেন হতাশ না হয় সেদিকে উচ্চ আদালতের সম্মানিত বিচারকবৃন্দ খেয়াল রাখবেন। কর্তৃত্ববাদী দুর্বিনীত শাসনের প্রকোপে জনগণের মধ্যে বিচারব্যবস্থা যেন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে না ওঠে, সেদিকেও তাদের দৃষ্টি রাখতে হবে।

তিনি বলেন, আইনগত এবং মানবিক সবদিক থেকেই বেগম খালেদা জিয়া জামিন পাওয়ার আইনগত অধিকার রাখেন। অথচ দেশের জনগণ দেখছে, নানা অজুহাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন পেতে নানা অজুহাত তুলে প্রলম্বিত করা হচ্ছে তার বন্দিজীবন।

রিজভী বলেন, নেত্রীকে বাঁচাতে হলে এখনই জামিন ও সুচিকিৎসা দরকার। তাই আমরা জনগণের পক্ষ থেকে সরকারকে বলতে চাই- দেশনেত্রীর জামিন নিয়ে এবার কোনো টালবাহানা করে বেগম জিয়ার জামিনে বাধা দেবেন না। আপনাদের সকল গণভিত্তি কর্পুরের মতো উবে গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তা রেজাউল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উপরে