ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
আপডেট : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১২:১৫

ঔষধি হলুদ

অনলাইন ডেস্ক
ঔষধি হলুদ

শুধু রান্নায় নয়, প্রসাধনের উপকরণ হিসেবেও অগ্রগণ্য হলুদ। বিশেষ করে মেয়েদের কাছে ত্বকের উজ্জ্বলতা রক্ষায় হলুদ সমাদৃত। তবে শুধু মসলা কিংবা প্রসাধনে নয়, বিভিন্ন রোগের চিকিত্সাতেও হলুদের ব্যবহার লক্ষণীয়। হালে মেয়েদের দেখা যায় ডেটল-পানিতে শিশুদের গোসল করাতে। কিন্তু যখন ডেটল ছিল না তখন মায়েরা তেল-হলুদ মাখিয়ে শিশুদের গোসল করাতেন। যেন ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন বা চুলকানি, খোস-পাঁচড়া থেকে শিশুকে রক্ষা করা যায়

ভেষজবিদের মতে, দেশে যতোগুলো ঔষধি মূল আছে তার মধ্যে হলুদ খুবই সহজলভ্য। হলুদের আরেক নাম হচ্ছে ‘কৃমিঘ্ন’ মানে কৃমি নাশকারী । নানা রোগের জন্মগত কীট-কৃমিকে ধ্বংস করে বলেই এরকম নাম হয়েছে। পেটে কৃমি নিরাময়ে হলুদ একটি আদর্শ ঔষধি। কাঁচা হলুদের রস ১৫/২০ ফোঁটা সামান্য লবণ মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে কৃমিনাশ হয়। যাদের লিভারে গণ্ডগোল আছে তাদের ব্যবস্থাপত্রেও হলুদ দিয়ে থাকেন কবিরাজরা। তাঁদের মতে, পাণ্ডু রোগে মুখে ফ্যাকাসে রং ঢেকে দেওয়ার জন্য হলুদ খুবই দরকার।

রোগীকে হলুদের রস ৫/১০ ফোঁটা থেকে এক চা চামচ পর্যন্ত একটু চিনি বা মধু মিশিয়ে খাওয়াতে হয়। এতে খুব উপকার হয়। হলুদ হাম জ্বরে বেশ কাজ দেয়। কাঁচা হলুদকে শুকিয়ে গুঁড়ো করে সঙ্গে উচ্ছে পাতার রস ও অল্প মধু মিশিয়ে হামের রোগীকে খাওয়ালে রোগী বেশ উপকার পাবে। গরুর মাংস, চিংড়ি মাছ এসব খেলে যাদের শরীরে চাকা চাকা হয়ে ফুটে ওঠে, চুলকায় তাদের জন্য হলুদ মহৌষধ। নিমপাতার গুঁড়ো ১ ভাগ, কাঁচা হলুদ শুকিয়ে গুঁড়ো করে ২ ভাগ এবং শুকনো আমলকীর গুঁড়ো ৩ ভাগ একসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে।

 

 

 

আয়ুর্বেদী মতে কফ, পিত্তজ ব্যাধিতেও হলুদের স্বীকৃতি রয়েছে। কফ বা কাশি হলে পাঁচ-সাত গ্রাম কাঁচা হলুদ পিষে নিতে হবে। তারপর গুঁড়ো হলুদ দেড় কাপ আন্দাজ পানিতে ৫/১০ মিনিট ফুটিয়ে ছেকে পানিটুক আলাদা করে সেই পানি অল্প চিনি মিশিয়ে এক চামচ করে মাঝে মাঝে খেলে কফজনিত রোগ সেরে যায়। হলুদের গুঁড়ো, আখের গুড় আর খাঁটি সরিষার তেল একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে হাঁপানিতে উপকার মেলে।

 

 

 

 

আঘাত, কাটা, ঘা, ফুলা বা ক্ষতেও হলুদের গুঁড়ো চমৎকার ফল দেয়। শরীরের কোনো জায়গা মচকে গেলে বা আঘাত লাগলে চুন, নুন ও হলুদ মিশিয়ে গরম করে লাগালে ব্যথা ও ফুলো কমে যায়। আর ফোঁড়া হলে পোড়া হলুদের ছাই পানিতে গুলে লাগালে দেখতে দেখতেই ঘা শুকোয়। মেছতা ও মুখের কালো দাগ দূর করতে পারে হলুদ। প্রথমে মনসার আঠার মধ্যে হলুদ এক সপ্তাহ পর্যন্ত ভিজিয়ে রাখতে হয়। এরপর ছায়ায় শুকিয়ে তা গুঁড়ো করে নিয়মিত মুখে লাগালে মেছতা সেরে যায়। দূর হয় মুখের কালো দাগও।

উপরে