ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
আপডেট : ৮ আগস্ট, ২০২০ ১৯:০০

প্রধানমন্ত্রী পদে মোদিকেই পছন্দ অধিকাংশ ভারতীয়ের!

অনলাইন ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী পদে মোদিকেই পছন্দ অধিকাংশ ভারতীয়ের!


ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদিকেই দেখতে চায় দেশটির অধিকাংশ মানুষ। শতকরা ৬৬ শতাংশ মানুষের কাছে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রথম পছন্দ মোদি। ভারতের ইংরেজি গণমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে-কারভি ইনসাইটস’ এর যৌথ উদ্যোগে করা ‘মোড অফ দ্য নেশন’ (এমওটিএন) জরিপে উঠে এসেছে এই তথ্য। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদির চলতি মেয়াদ শেষে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসাবেও মোদিকেই দেখতে চায় জরিপে অংশ নেওয়া ৬৬ শতাংশ মানুষ। 
এই তালিকায় মোদির তুলনায় অনেক পিছনে সাবেক কংগ্রেস সভাপতি ও দলটির সাংসদ রাহুল গান্ধী। তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চায় মাত্র ৮ শতাংশ মানুষ। মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে যোগ্যতম ব্যক্তি কংগ্রেসের অন্তবর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী। 
প্রধানমন্ত্রী পদে আর যে যে রাজনৈতিক নেতাদের মানুষ দেখতে চায় তারা হলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (৪ শতাংশ), বিজেপি নেতা ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (৩ শতাংশ), আপ নেতা ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (৩ শতাংশ), তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা মমতা ব্যনার্জি (২ শতাংশ), কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী (২ (শতাংশ), বিজেপি নেতা ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং (১ শতাংশ), কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি (১ শতাংশ), শিবসেনা প্রধান ও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে (১ শতাংশ) এবং বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা) নেত্রী মায়াবতী (১ শতাংশ)।  
‘মোড অফ দ্য নেশন’ জরিপটি করা হয়েছে চলতি বছরর ১৫ জুলাই থেকে ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে। সাধারনত এই ধরনের জরিপের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে তাদের অভিমত নেওয়া হয়। কিন্তু করোনার আবহে নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্নের ভিতিত্তে টেলিফোনে ওই সব মানুষদের সাথে কথা বলে এই জরিপ করা হয়েছে। গোটা দেশজুড়ে ১২,০২১ জন মানুষের মধ্যে এই জরিপ করা হয়েছিল, এর মধ্যে ৬৭ শতাংশ জরিপ করা হয় গ্রামীণ এলাকায় এবং ৩৩ শতাংশ জরিপ করা হয় শহরের মানুষের মধ্যে। অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব., ওড়িশা, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা, কেরল, দিল্লি, অসম, গুজরাট সহ কয়েকটি রাজ্যের ৯৭ টি লোকসভা কেন্দ্র ও ১৯৪ টি বিধানসভার কেন্দ্রে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে চালানো হয় এই জরিপ। 
ভারতের সর্বকালের সেরা প্রধানমন্ত্রী হিসাবেও নরেন্দ্র মোদিকেই বেছে নিয়েছে ওই জরিপে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষেরা। অন্তত ৪৪ শতাংশ মানুষের অভিমত এটাই। এই তালিকায় ১৪ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। মাত্র ১২ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধী। ৭ শতাংশ ভোট পেয়ে যৌথভাবে এই তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছেন মনমোহন সিং ও প্রয়াত জওহরলাল নেহেরু। মাত্র ৫ শতাংশ মানুষের অভিমত দেশের সর্বকালের সেরা প্রধানমন্ত্রী হলেন প্রয়াত লাল বাহাদুর শ্রাস্ত্রী। 
গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে বিপর্যস্ত হওয়ার পরই দলের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল গান্ধী। সেই থেকে এক বছর পার হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত সভাপতি ঠিক করতে পারেনি তারা। ইতিমধ্যেই দলের প্রবীন ও নবীন’দের মধ্যে বিভিন্ন কারণে একটা মতানৈক্যও তৈরি হচ্ছে। কেউ কেউ আবার প্রকাশ্যে বিদ্রোহও করছেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও সাবেক সভাপতি রাহুলের ওপরই ভরসা রাখছেন এমওটিএন’এর ওই জরিপে অংশগ্রহণকারী অধিকাংশ মানুষ। ২৩ শতাংশের অভিমত রাহুলই পারেন দলকে নেতৃত্ব দিতে। ২০ শতাংশ মানুষের অভিমত দলের হাল ফেরাতে দায়িত্ব দেওয়া হোক মনমোহন সিং’কে। সোনিয়া গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে দলের শীর্ষ নেতা হিসাবে পছন্দ ১৪ শতাংশ মানুষের। 
‘ইন্ডিয়া টুডে-কারভি ইনসাইটস’ এর যৌথ উদ্যোগে করা ওই জরিপে চীন-ভারত সম্পর্ক নিয়েও অভিমত জানতে চাওয়া হয়। গত ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপতক্যায় ভারত-চিন সংঘর্ষে এক কর্ণেল সহ ২০ জন ভারতীয় সেনা জওয়ান নিহত হয়। এরপরই চীনকে ‘হাতে না মেরে ভাতে মারার’ পরিকল্পনা নেয় কেন্দ্রের মোদি সরকার। তারই অংশ হিসাবে জাতীয় সুরক্ষা অখন্ডতার প্রশ্নে চাইনিজ অ্যাপস নিষিদ্ধ ঘোষণা করা, বেশ কিছু প্রকল্প থেকে চীনা সংস্থার বরাত প্রত্যাহারের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এমন অবস্থায় ৫৯ শতাংশ মানুষের চায় চীনের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করুক ভারত। তাদের অভিমত চীনকে শিক্ষা দিতে মোদি সরকার যা যা পদক্ষেপ নিয়েছে তার সবটাই ঠিক। যদিও ৩৪ শতাংশ মানুষ যুদ্ধের বিপক্ষে। 

উপরে