logo
আপডেট : ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ১৬:২৮
বিয়ে করেই শাস্তির মুখে সৌম্য সরকার!
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিয়ে করেই শাস্তির মুখে সৌম্য সরকার!


নানা বিতর্কের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের তারকা সৌম্য সরকারের বিয়ে। বিয়েতে মারামারি থেকে শুরু করে মোবাইল ফোন চুরির ঘটনাও ঘটেছে। এরইমধ্যে বিয়েতে ফোন চুরির অভিযোগে দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এবার জীবনের নতুন ইনিংসে নেমেই শাস্তির মুখে পড়তে যাচ্ছেন সৌম্য ও তার পরিবার। বিয়ের আশীর্বাদ অনুষ্ঠানের হরিনের চামড়া ব্যবহারের কারণেই কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে সৌম্যকে।

সরেজমিনে এ ঘটনার তদন্ত করেছেন বন্যপ্রাণী ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিটের ইন্সপেক্টর অসীম মল্লিক। এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়লেই ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিট। তবে তদন্ত প্রতিবেদন এখনো জমা পড়েনি বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিটের পরিচালক এসএম জহির উদ্দিন আকন এক গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ওই ঘটনার তদন্তে ঢাকা থেকে ইন্সপেক্টর অসীম মল্লিককে সাতক্ষীরায় সৌম্য সরকারের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। তিনি তদন্ত শেষ করে এর প্রতিবেদন অফিসে জমা দিলেই প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ এর আগে বন্যপ্রাণী ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিটের পরিচালক আকন জানিয়েছিলেন, ‘কেউই বন্যপ্রাণীর চামড়া ব্যবহার করে বিয়ে বা কোনো অনুষ্ঠান করতে পারেন না। তাছাড়া হরিণের চামড়া রাখাও অপরাধ। আমরা এ ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছি।’
 
উল্লেখ্য, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরায় নিজ বাড়িতে সৌম্য সরকার তার বিয়ের আশীর্বাদে হরিণের চামড়াকে আসন হিসেবে ব্যবহার করেন। আর আশীর্বাদের কয়েকটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়ে। একটি ছবিতে দেখা গেছে, হরিণের চামড়ার তৈরি আসনের ওপর বসে আশীর্বাদ অনুষ্ঠান হয়েছে সৌম্য সরকারের। আরো দুটি ছবিতে দেখা গেছে ওই চামড়ার ওপর সপরিবারে দাঁড়িয়ে সৌম্য সরকার। কেউ কেউ এটাকে ধর্মীয় রীতি বলে মন্তব্য করলেও অনেকে বলেছেন সনাতন ধর্মে এমন কোনো লৌকিকতা নেই। বিষয়টি সৌম্যের পারিবারিক ব্যাপার। সমালোচনার মুখে ছাইচাপা দিতে এ নিয়ে বক্তব্য দেন সৌম্যের বাবা সাতক্ষীরার সাবেক শিক্ষা কর্মকর্তা কিশোরী মোহন সরকার। তিনি ব‌লেন, ‘এটি আমাদের পা‌রিবা‌রিক ঐতি‌হ্যের নিদর্শন। চামড়া‌টি মূলত প্রার্থনার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি বহু পুরনো। যুগ যুগ ধরে তা ব্যবহৃত হ‌য়ে আস‌ছে। বংশানুক্রমে সেটি পেয়েছি। আমার বাবার কাছ থেকে হরিণের চামড়াটি পে‌য়ে‌ছি আমি। আমার জানা মতে, উনি উনার বাবার কাছ থেকে পেয়েছি‌লেন।’ তিনি বলেন, ‘পূর্বপুরুষ থেকে আরও অনেক জিনিস পেয়েছি আমি। সব আমার কাছে রয়েছে। সৌম্য আমার ছোট ছেলে। তার বিয়ে নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছি। তবে হরিণের চামড়ার বিষয়টি নি‌য়ে এক‌টি গ্রুপ তিলকে তাল করার চেষ্টা করছে। কেন কর‌ছে তা আমি জা‌নি না।’ তবে হরিণের চামড়া রাখার জন্য কোনো লাইসেন্স রয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর তিনি দেননি। প্রসঙ্গত, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের ধারা ৬ অনুযায়ী, লাইসেন্স ব্যতীত কোনো ব্যক্তির কাছে বন্যপ্রাণী, বন্যপ্রাণীর অংশ পাওয়া গেলে অথবা বন্যপ্রাণী থেকে উৎপন্ন দ্রব্য বিক্রয়, আমদানি-রফতানি করলে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ এক বছরের সাজা অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটলে তিন বছরের সাজা অথবা সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা জরিমানা।