চম্পাকে একাধিকবার ধর্ষণের পর হত্যাকরে ফেলে দেয়া হয়
কক্সবাজারের চকরিয়ায় চলন্ত সিএনজি চালিত অটোরিকশা থেকে জবাই করা মরদেহ ফেলে দেয়া তরুণীর হত্যাকারিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫ এর সদস্যরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় র্যাব-১৫ এর মিডিয়া সমন্বয়ক আবদুল্লাহ মো. শেখ শাদী এক তথ্য বিবরণীতে জানিয়েছেন, অভিযুক্ত সিএনজি চালককে গ্রেফতার এবং সিএনজিটিও জব্দ করা হয়েছে।
হত্যার আগে চম্পা (১৮) কে একাধিকবার ধর্ষণ করে ঘাতকরা। পরে সড়কে ফেলে তাকে হত্যা করা হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে বলে জানান র্যাব-১৫ অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ।
ধর্ষণ ও হত্যাকারী হিসেবে স্বীকারোক্তি দেয়া গ্রেফতার মো. জয়নাল আবেদীন (১৮) কক্সবাজারের পেকুয়ার মেহেরনামার নন্দীরপাড়ার মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তার সাথে জড়িত পলাতক সাজ্জাদ হোছাইন (৩০) পেকুয়ার শেখেরকিল্লার আবুল হোছাইনের ছেলে। তাকে ধরতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে র্যাবের বিশেষ টিম। হত্যার শিকার তরুণী চম্পা খাতুন (১৮) কক্সবাজার সদরের খরুলিয়ার নয়াপাড়ার নছিমন চালক রুহুল আমিনের বড় মেয়ে ও রামুর তেচ্ছিপুল এলাকার শাহ আলমের স্ত্রী। লকডাউন শুরুর আগে চট্টগ্রামে ফুফুর বাসায় বেড়াতে গিয়ে মা-বাবার জন্য মন কাঁদায় শত নিষেধের পরও বুধবার লকডাউন ঝুঁকিতে সিএনজি চালিত অটোরিকশা যোগে তিনি কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। চকরিয়া এসে হত্যার শিকার হন।
র্যাব-১৫ সূত্র জানায়, লকডাউনের মাঝে গত বুধবার (৬ মে) চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়ার নয়াপাড়ায় বাবার বাড়িতে আসছিলেন ১৮ বছরের তরুণী চম্পা। সন্ধ্যার দিকে চকরিয়া সীমান্তে পৌঁছার পর তাকে সিএনজি চালক পেকুয়ার দিকে নিয়ে যায়। রাতে চকরিয়া-পেকুয়া-বাঁশখালী আঞ্চলিক সড়কের চকরিয়ার কোনাখালী ইউনিয়নের মরং ঘোনা এলাকায় গলাকেটে তাকে হত্যার পর সিএনজি থেকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। ফেলে দেয়ার সময় মরদেহটির মুখ ওড়নায় পেঁচানো অবস্থায় ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ রাত সোয়া ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌছে মরদেহটি উদ্ধার করে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গেছে ,তাকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে। তখন তাকে চট্টগ্রাম থেকে বহন করে আনা সিএনজি চালকের মোবাইল নাম্বারটি সংগ্রহ করে তদন্তে নামে র্যাব সদস্যরা। তার এবং পেকুয়া সড়কে চলাচলকারী সিএনজি সমিতির লাইনম্যান ও জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় নিহত চম্পাকে সর্বশেষ বহন করা সিএনজির চালক জয়নালকে সনাক্ত করা হয়। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে জয়নাল তরুণী চম্পাকে হত্যার কথা অকপটে স্বীকার করে। হত্যার আগে তাকে ধর্ষণও করা হয় বলে জানায় জয়নাল। তার এ কাজে সহযোগী হয়েছে সাজ্জাদ। দুজন মিলেই তাকে ধর্ষণ ও হত্যার পর নিজেদের বাঁচাতে সড়কের উপর ফেলে দেয়া হয় বলেও জানায় গ্রেফতার জয়নাল।
উল্লেখ্য, বুধবার রাত ১০টার দিকে চকরিয়া-পেকুয়া-বাঁশখালী সড়কের কোনাখালী ইউনিয়নের মরংঘোনা এলাকায় সড়কে এক তরুণীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং নিহত তরুণীর পিতা ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়ের লাশ শনাক্ত করে। এসময় চম্পা চট্টগ্রামের ফুফুর বাসা থেকে কক্সবাজারে নিজ বাড়িতে ফিরছিল।