ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৭:০৭

১২৫ বছরেও হয়নি চাঁদপুর পৌরসভার পরিকল্পিত বর্জ্য-ব্যবস্থাপনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
১২৫ বছরেও হয়নি চাঁদপুর পৌরসভার পরিকল্পিত বর্জ্য-ব্যবস্থাপনা


১২৫ বছরেও হয়নি চাঁদপুর পৌরসভার পরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। প্রথম শ্রেণির চাঁদপুর পৌরসভা বর্জ্য অপসারণে সুপরিকল্পিত উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। পৌরসভার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বর্জ্য ফেলে শহরের পরিবেশ দূষণসহ সৌন্দর্য নষ্ট করছে। 
পৌর নাগরিকগণ সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় চরম ভোগান্তি শিকার ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার স্থায়ী উদ্যোগ নিতে না পারার বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষ স্বীকারও করেছেন। পৌর কর্তৃপক্ষ শীঘ্রই একটি প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ী বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কথা জানান। 
জানা যায়, চাঁদপুর পৌরসভার ৯ বর্গ কিলোমিটার বর্ধিত অংশসহ বর্তমান আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটারের চাঁদপুর পৌরসভায় প্রায় দেড় লাখ মানুষের বসবাস। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় প্রথম শ্রেণির এই পৌরসভায় বর্জ্য নিষ্কাশনের স্থায়ী ব্যবস্থা নেই। ফলে পৌর নাগরিকগণ যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলছেন। পৌর কর্তৃপক্ষ শহরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ময়লা ফেলার স্থান নির্ধারণ করে দিলেও, তা নিয়ে নাগরিকদের মাঝে রয়েছে প্রশ্ন ? 
বিশেষ করে চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ, হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, হাসান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এই অস্থায়ী ময়লা ফেলার স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। তাতে পথচারী, যাত্রীসহ সকল শ্রেণীর নাগরিকদের চরম ভোগান্তি ও পরিবেশ দূষণ সৃষ্টি হচ্ছে।
চিত্রলেখা এলাকার বাসিন্দা হাজী বেলায়েত হোসেন জানান, এই এলাকার বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সমস্ত বর্জ্য এখানে ফেলা হচ্ছে, যার ফলে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। রাস্তা দিয়ে চলাচলকারীরা ময়লার স্তূপের দুর্গন্ধে প্রতিনিয়ত অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় পড়ছেন। 
সেখানের ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা এখানে ঠিকমত ব্যবসা করতে পারছি না। কারণ ক্রেতারা দোকানে আসলে বেশিক্ষণ বসতে পারে না। তাই ব্যবসার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। এদিকে শহরে বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোন স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশন তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ না করায় খোলা জায়গাতে ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।
চাঁদপুর পৌর কর্তৃপক্ষ শহর থেকে সংগৃহীত সকল বর্জ্য স্বর্নখোলা রোডের লাশ ঘরের পাশেই রাখছেন। এতে ওই এলাকার নাগরিকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। চাঁদপুরের সচেতন মহল মনে করেন, পৌরবাসীর জন্য পরিকল্পিতভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) চাঁদপুরের সভাপতি অধ্যাপক মোশারফ হোসেন জানান, পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সবচাইতে দুর্বল কাজ। সামগ্রিক বর্জ্য ডাম্পিং এর মাধ্যমে তা পুনঃ প্রক্রিয়া করে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহারের প্রক্রিয়া করতে হবে। যতই উন্নয়ন করা হোক না কেন, সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকলে সেই উন্নয়ন ভেস্তে যাবে। তাই পৌর কর্তৃপক্ষ ময়লা ফেলার স্থান নির্ধারণ করতে না পারাটা ব্যর্থতা। এতে করে মানুষের স্বাস্থ্যহানি ও শহরের সৌন্দর্য বিনষ্ট হচ্ছে। 
চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র সিদ্দিকুর রহমান ঢালী জানান, চাঁদপুর পৌরসভায় বর্জ্য অপসারণে প্রায় ৪শ’ স্থায়ী পরিচ্ছন্ন কর্মী এবং মাস্টার রোলে ২০জন কর্মী বড় ড্রেনেজ পরিচ্ছন্নতায় কাজ করছেন। স্থায়ী কর্মীদের মাসিক ৪/৫ হাজার টাকা বেতন ও মাস্টার রোলে দৈনিক ভিত্তিতে ৫শ’ টাকা করে প্রদান করা হয়। এই খাতে পৌরসভাকে প্রতিমাসে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করতে হয়।
মেয়র ও পৌর পরিষদ একটি নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। যাতে করে বাসস্ট্যান্ড স্বর্নখোলা রোডে বর্জ্য ডাম্পিং পয়েন্টকে সংস্কার করে নতুনভাবে সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি পৌর পরিষদ শহরের আশপাশে কিছু জমি ক্রয় করারও প্রস্তাব করেছে।

উপরে